রোমান্টিক

 রোমান্টিক ও আবেগপ্রবণ গল্প

ভালোবাসার শেষ বিকেল


শীতের শেষ বিকেল। সূর্য তার মৃদু সোনালী আলোয় আকাশকে লালচে আভায় রাঙিয়ে তুলেছে। চারপাশে একটা শান্ত মায়াময় পরিবেশ। নিশা বারান্দায় দাঁড়িয়ে, তার চোখে দিগন্তের শেষ সীমানা, কিন্তু মনের গভীরে চলছে নানা ভাবনা। তার হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দনে আজকের দিনের বিশেষত্ব স্পষ্ট।

আজ রাহুলের সাথে তার প্রথম পরিচয়ের এক বছর পূর্ণ হলো। ঠিক এক বছর আগে এই সময়, তারা দুজন একটি ছোট্ট ক্যাফেতে একে অপরের সাথে পরিচিত হয়েছিল। সেই প্রথম দেখার স্মৃতিগুলো আজও নিশার মনে সতেজ। রাহুলের চোখের সেই মৃদু হাসি, তার নরম কণ্ঠস্বর, এবং সহজ-সরল আচরণ নিশার হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছিল।  


ধীরে ধীরে তারা একে অপরকে চিনতে শুরু করে, বন্ধুত্বের পথ ধরে সম্পর্কটি প্রেমে পরিণত হয়। কিন্তু নিশা জানতো না, রাহুলের প্রতি তার ভালোবাসা এতটা গভীর হয়ে যাবে। তাদের প্রতিটি দিন ছিল এক ধরনের নতুন আবিষ্কার—ছোট ছোট মুহূর্ত, একসাথে হাঁটা, গল্প করা, কিংবা নিঃশব্দে বসে থাকা।  

আজকের এই বিশেষ দিনে রাহুল তাকে দেখতে আসবে। নিশার মন ভরে উঠছে আনন্দে, যদিও তার মনের কোণে কিছুটা অনিশ্চয়তাও কাজ করছে। কেননা আজ সে তার মনের গোপন কথাটি বলবে, যেটা এতদিন ধরে জমিয়ে রেখেছিল। 


ঘণ্টাখানেক পর রাহুল এসে পৌঁছাল। তার চোখে সেই চেনা মিষ্টি হাসি। দুজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো। যেন অনেক কিছু বলার আছে, কিন্তু মুখ থেকে কিছুই বের হচ্ছিল না। রাহুল তার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে বলল, "আজকের দিনটা আমাদের জন্য বিশেষ, তাই না?"  

নিশা মৃদু হেসে বলল, "হ্যাঁ, ঠিক তাই। একটা বছর কিভাবে কেটে গেলো, বুঝতেই পারিনি।"  


তারা দুজন পাশের পার্কে হাঁটতে বের হলো। শীতের মৃদু বাতাস তাদের দুজনকে আরও কাছে নিয়ে এলো। রাহুল নিশার হাত ধরলো, এবং সেই স্পর্শে নিশার হৃদয়ে এক অদ্ভুত শিহরণ জাগল। রাহুল ধীরে ধীরে বলল, "নিশা, তুমি জানো, তোমাকে ভালোবাসা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার।"  


নিশার চোখে জল এলো। সে কখনো ভাবেনি যে রাহুল তার প্রতি এতটা আন্তরিক হতে পারে। অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর নিশা সাহস করে বলল, "আমিও তোমাকে ভালোবাসি, রাহুল।"  

এই কথা শুনে রাহুলের চোখে মৃদু হাসির ঝলক দেখা দিলো। তারা দুজন একে অপরের দিকে গভীর ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। চারপাশের পৃথিবী যেন থেমে গেলো, শুধুমাত্র তাদের দুজনের জন্যই এই মুহূর্ত।


তাদের ভালোবাসার এই গভীর সংযোগ, একে অপরের প্রতি যে টান, সেটাই ছিল তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। হয়তো এই মুহূর্তগুলোই ভালোবাসার আসল সৌন্দর্য—কথার থেকেও বড় হয়ে ওঠে নিঃশব্দ অনুভূতি।

এই গল্পটিতে ভালোবাসার সংবেদনশীলতা, সম্পর্কের গভীরতা এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধার দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। সম্পর্কের মাধুর্য এবং ঘনিষ্ঠতার এমন দিকগুলোই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সম্পর্ককে আরও অর্থবহ করে তোলে।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post