ফুলের বন্ধু

Ad1

 **ফুলের বন্ধু**

এক গ্রামে ছিল ছোট্ট এক মেয়ে, যার নাম ছিল মিষ্টি। মিষ্টি ছিল খুবই মিষ্টিভাষী ও সরল স্বভাবের। তার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল গ্রামের প্রান্তের বাগানটি, যেখানে নানা রঙের ফুল ফুটে থাকত। বাগানের প্রতিটি ফুলের সাথে তার ছিল এক গভীর বন্ধুত্ব। প্রতিদিন বিকেফুলের বন্ধু**লে মিষ্টি বাগানে যেত, ফুলেদের সাথে কথা বলত, তাদের কাছে গল্প শোনাত, আর নিজের মনের কথা শেয়ার করত।

মিষ্টির সবচেয়ে প্রিয় ছিল লাল গোলাপ। সে গোলাপের নাম দিয়েছিল “লালী।” প্রতিদিন মিষ্টি লালীর কাছে যেত এবং বলত, "লালী, আজ আমি তোমার জন্য নতুন গল্প নিয়ে এসেছি। শুনবে তো?"

Ad2

লালী তার সৌরভ ছড়িয়ে মিষ্টিকে স্বাগত জানাত, আর মিষ্টি বুঝত যে লালী তার গল্প শুনতে রাজি। বাগানে আরও অনেক ফুল ছিল—গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, চামেলি—তাদের সাথেও মিষ্টির ভালো বন্ধুত্ব ছিল। প্রতিটি ফুল যেন মিষ্টির জীবনের একেকটা রঙ।



একদিন, মিষ্টি বাগানে গিয়ে দেখল, তার প্রিয় লালী একটু মলিন হয়ে আছে। লালীর পাপড়িগুলো ঝরে পড়ছে, আর তার রং ম্লান হয়ে যাচ্ছে। মিষ্টি খুব মন খারাপ করে লালীর পাশে বসে পড়ল। সে ভাবল, "লালী, তোমার কি হয়েছে? তুমি এমন কেন দেখাচ্ছো?"


মিষ্টি বুঝতে পারল, লালী হয়তো একটু বেশি রোদে পুড়ে গেছে অথবা পর্যাপ্ত পানি পায়নি। মিষ্টি দ্রুত বাগানের ট্যাপ থেকে পানি এনে লালীর গোড়ায় ঢেলে দিল। তারপর সে হাত দিয়ে লালীর পাপড়িগুলো আলতো করে ছুঁয়ে বলল, "লালী, তুমি ঠিক হয়ে যাবে। আমি তোমার যত্ন নেব।"


পরের কয়েক দিন মিষ্টি প্রতিদিন বাগানে এসে লালীর জন্য পানি আনত, তাকে যত্ন করে পরিচর্যা করত। সে লালীর সাথে কথা বলত, তাকে সাহস যোগাত। ধীরে ধীরে লালী আবার সজীব হয়ে উঠল, তার পাপড়িগুলো উজ্জ্বল লাল রঙে ফুটে উঠল।


মিষ্টি খুব খুশি হলো। সে লালীর দিকে তাকিয়ে বলল, "দেখেছো, লালী? তুমি আবার তোমার পুরনো রূপে ফিরে এসেছো। আমি জানতাম তুমি ঠিক হয়ে যাবে!"

Ad4

লালী যেন তার মিষ্টির কথা শুনে হাসল, তার সৌরভ ছড়িয়ে দিল বাগানের চারপাশে। বাগানের অন্যান্য ফুলও যেন মিষ্টির এবং লালীর এই বন্ধুত্ব দেখে খুশি হয়ে উঠল।


মিষ্টি বুঝতে পারল, ফুলেরা শুধু দেখার জন্য নয়, তাদেরও যত্ন নিতে হয়। তারা আমাদের মতোই বন্ধুত্বের যোগ্য। মিষ্টি তার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা পেল—বন্ধুত্ব শুধু মানুষের সাথে নয়, প্রকৃতির সাথেও গড়ে তোলা যায়।


এরপর থেকে মিষ্টি প্রতিদিন বাগানে যেত এবং শুধু লালী নয়, বাগানের সব ফুলের সাথেই বন্ধুত্ব গড়ে তুলত। সে বুঝল, প্রকৃতির এই নীরব বন্ধুরা আমাদের জীবনে আনন্দ এনে দেয়, আমাদের সঙ্গ দেয়, আর আমাদের মনকে সুন্দর করে তোলে। 


ফুলেরা হয়ে উঠল মিষ্টির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সে জানল, বন্ধুত্বের মূলমন্ত্র হলো ভালোবাসা আর যত্ন। এবং প্রকৃতির এই বন্ধুত্ব আমাদের জীবনের রং আরও উজ্জ্বল করে তুলতে পারে, যদি আমরা সত্যিকার অর্থে তাদের সঙ্গ উপভোগ করি।

Ad5

মিষ্টির জন্য বাগানটি আর শুধু একটি বাগান রইল না, বরং সেটি হয়ে উঠল তার প্রিয় বন্ধুত্বের স্থান। ফুলেরা তার বন্ধু হয়ে তার জীবনে সুখ এবং শান্তি এনে দিল, আর মিষ্টি তার প্রতিটি দিনের শুরু আর শেষ ফুলেদের সঙ্গেই কাটাতে শুরু করল।


এভাবেই, মিষ্টি ও ফুলেদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠল, যা তার জীবনের একটি সুন্দর গল্প হয়ে রইল।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post